কালুক । সিকিমের পশ্চিমদিকে পাহাড়ের গায়ে ছোট্ট একটা শহর । নিউ জলপাইগুড়ি (শিলিগুড়ি)
রেলস্টেশন থেকে ১১৯ কিলোমিটার দূরে এই শহর বেড়ানোর জন্য একটা বেশ নতুন জায়গা । জায়গাটার
অনেকগুলো বিশেষত্ব আছে, সেগুলো লেখার মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় লিখব । আপাততঃ প্রথম
বিশেষত্বটা দিয়ে শুরু করি – যেটার জন্য আমি এখানে গেছিলাম । কালুক মধুচন্দ্রিমা
যাপনের জন্য বিশেষ মনোরম জায়গা !
|
নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার পথে - লেটে ! |
২৬শে ডিসেম্বর, ২০১২ বুধবার রাত ১০:০৫ এ শিয়ালদহ থেকে
দার্জিলিঙ মেল ধরে আমরা এন জে পি (নিউ জলপাইগুড়ি) র উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম । সঙ্গী,
বলা বাহুল্য, আমার স্ত্রী অমৃতা । এ সি থ্রী টিয়ারে (উচ্চারণটা ‘টায়ার’ নয়) আমরা
দু’টো আপার বার্থ নিয়েছিলাম । এ সি কামরায় রাতের বেলা এমনিতেও বাইরে কিছু দেখা
যায় না তাই ট্রেনে ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই শুয়ে পড়লাম । শিয়ালদহ থেকে এন জে পি র
পথের বিবরণ দেওয়ার কিছু নেই, শুধু এটা বলে রাখি এইসময়ে রাস্তায় অনেক সময়ে কুয়াশা
হয় তাই আমাদের ট্রেন তিনঘন্টা লেট করে বেলা এগারোটায় পৌঁছল ।
|
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছে |
এন জে পি থেকে কালুক যাওয়ার গাড়ি পাওয়া সহজ নয় কারণ আগেই বলেছি কালুক বেড়ানোর
পক্ষে একটা নতুন এবং ছোট জায়গা । এখানে এখনও খুব বেশি ট্যুরিস্টরা যায় না । হানিমুনে কোনও ঝক্কি নিতে চাই না বলে আমরা আগে থেকেই হোটেলের সঙ্গে কথা বলে গাড়ি
বুক করে রেখেছিলাম । এন জে পি তে ‘মারুতি অল্টো’ নিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন
ড্রাইভার সুরেশ গুরুং । স্টেশন থেকে বেরিয়ে ড্রাইভারকে খুঁজে বের করে গাড়িতে
মালপত্র তুলে আমরা যখন কালুকের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম তখন ঠিক বেলা সাড়ে এগারোটা ।
|
তিস্তা নদী - এখন ডানদিকে |
এই অঞ্চলে যারা গেছে তারা সবাই জানে যে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম যেতে হলে সেভক রোড
ধরতে হয় । এই সেভক রোড ধরে সমতলে চলতে চলতে হঠাৎ একসময়ে শুরু হয়ে যায় পাহাড় আর
তারপর পাহাড়ী রাস্তা ধরে তিস্তা নদীকে কখনও ডানদিকে কখনও বাঁদিকে রেখে এগিয়ে চলা ।
|
জওহরলাল নেহেরু ব্রীজ - গাড়ির ভেতর থেকে |
|
জোড়থাং |
এইভাবে চলতে চলতে একসময়ে একটা ব্রীজ পড়ে যেটা পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের সীমানায় ।
ব্রীজটার নাম ‘জওহরলাল নেহেরু ব্রীজ’ আর জায়গাটার নাম মেল্লি । মেল্লি শহরটার
বৈশিষ্ট্য হল এটা পশ্চিমবঙ্গ আর সিকিম দুটো রাজ্যের মধ্যেই পড়ে ।
মেল্লি পেরিয়ে আমরা আরও এগিয়ে চললাম । দুপুর আড়াইটে নাগাদ পৌঁছলাম ‘জোড়থাং’ এ
। জোড়থাং হল সিকিমের একটা বড় শহর – প্রধান বানিজ্যকেন্দ্রও বলা যেতে পারে । জোড়থাং
থেকে সিকিমের প্রায় সব জায়গার যাওয়া যায় । এখানে আমরা লাঞ্চ করার জন্য দাঁড়ালাম । একটা
মোটামুটি চলনসই রেস্টুরেন্টে দু’প্লেট মিক্সড্ চাউমিন নেওয়া হল । দাম পড়ল ৬০/- করে ।
এরপর আবার এগিয়ে চলা । এখন আমাদের সঙ্গী ‘রঙ্গিত’ নদী (এই নদীর নাম ছোটবেলায়
ভূগোল বইতে আমরা সবাই পড়েছি – তবে এটা বড় না ছোট, সেটা আর জেনে ওঠা হয়নি) । চলতে
চলতে একসময়ে দিনের আলো ফুরিয়ে এল । পশ্চিম সিকিমের রাস্তাঘাট বেশ খারাপ আর জায়গায়
জায়গায় মেরামতির কাজ চলছে । এইসব বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে আমরা যখন কালুক পোঁছলাম তখন
ঘড়ি বলছে সন্ধ্যে ছ’টা ।
আমরা ছিলাম ‘ঘন্ডে ভিলেজ রিসর্ট’ এ । জায়গাটা কালুক বাজারে । মারুতি অল্টো
ঘন্ডের একেবারে সামনে পর্যন্ত যায় না, শেষের মিনিট পাঁচেকের ঢালু পথটুকু হেঁটে
যেতে হয় । রিসর্টের একজন লোক এসে আমাদের মালপত্র নিয়ে গেল আর আমরা গেলাম রিসেপশনে
। এখানে প্রথমেই আমাদের সাদা সিল্কের কাপড় দিয়ে অভ্যর্থনা করা হল । এরপর পেপার
ফর্ম্যালিটি সেরে আমরা আমাদের ঘরে চলে এলাম ।
|
ঘন্ডে ভিলেজ রিসর্ট - ঘরের ভেতর |
‘ঘন্ডে’ র প্রধান হোটেলটা ছাড়াও পাহাড়ের ধাপে ধাপে আলাদা আলাদা কটেজ রয়েছে,
তার মধ্যে ‘নর্সিং ২’ এ আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল । এই ঘরগুলো ‘সুপার ডিলাক্স’
রুম – ভাড়া ১,৮০০/- (ব্রেকফাস্ট যোগ করলে ভাড়া ২,১০০/-) । এর সঙ্গে যোগ হবে ১০%
সার্ভিস ট্যাক্স । ঘরে চা বা কফি দেওয়া হয় না, তবে চা-কফি-দুধ-চিনির একগুচ্ছ ছোট
ছোট প্যাকেট দিয়ে যায় আর এর সঙ্গে ঘরে একটা ইলেক্ট্রিক কেটলি আছে যাতে ইচ্ছে হলে
চা বা কফি তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে । ঘরে রুম হিটার নেই, অবশ্য তার দরকার আছে বলে
আমার মনেও হয় না । বাথরুমে গিজার আছে যেটা যেকোনও সময়েই চালানো যেতে পারে । আর
রয়েছে ২৪ ঘন্টার রুম সার্ভিস (যদিও মাঝরাতে সার্ভিস পাওয়া যায় কিনা আমরা সেটা
দেখার কখনও চেষ্টা করিনি !) ।
হোটেলে পৌঁছে জামাকাপড় ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম । কিছুক্ষণের মধ্যে রাতের ডিনারের
অর্ডার দিলাম । এদের একটা ৬ – ৭ পৃষ্ঠার বিশাল মেনু কার্ড আছে যাতে
ইন্ডিয়ান-চাইনিজ-কন্টিনেন্টাল সবরকমের খাবার পাওয়া যায় । আমরা আশা করিনি যে সেই
মেনুর সব খাবার এরা সাপ্লাই দিতে পারে তাই রুম সার্ভিসের ছেলেটি যখন বলল – “আপ কোই
ভী আইটেম অর্ডার কর্ সক্তে হ্যাঁয়” তখন কিছুটা অবাকই হলাম ।
|
চাঁদের আলোয় কাঞ্চনজঙ্ঘা |
ঘন্ডের প্রায় সবক’টা ঘরের ভেতর থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় । আমরা যেদিন
পৌঁছেছি, তার আশেপাশে কোনও একদিন পুর্ণিমা ছিল আর আকাশ পরিষ্কার থাকার জন্য চাঁদের
আলোয় কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছিল । দৃশ্যতই অত্যন্ত সুন্দর ।
ডিনার ডাইনিং হলেও করা যায় আবার ঘরেও আনিয়ে খাওয়া যেতে পারে । আমরা দ্বিতীয়টাই
করলাম কারণ আমাদের কটেজ থেকে ডাইনিং হলটা হেঁটে বেশ কিছুটা দূরে আর এই পথটা বেশ
ঠান্ডা । প্রথমদিন রাতে খাওয়া হল – বাটার রুটি, টিবেটিয়ান নান আর চিকেন দো-পিঁয়াজা
। সব মিলিয়ে খরচ হল ২৪২/- (১০% সার্ভিস ট্যাক্স যোগ করে) । এরপর ... কালুকে প্রথম
রাত্রিযাপন !
|
কাঞ্চনজঙ্ঘা - পরেরদিন সকালে |
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১২, শুক্রবার – কালুকে আমাদের সাইট-সিয়িং প্রথম এর দিন । সকালে
হোটেলে ব্রেকফাস্ট করলাম চানা-বাটোরা দিয়ে । খরচ ১৩২/- । ব্রেকফাস্ট দিতে একটু
বেশি দেরি করে ফেলায় আমাদের বেরোতে বেরোতে প্রায় সাড়ে দশটা বেজে গেল । গাড়ি বলাই
ছিল – আমরা কালুকে যতদিন ছিলাম প্রত্যেকদিনই গেছি সুরেশ গুরুং - এর গাড়িতে ।
লোকটির কথাবার্তা বেশ ভালো এবং গাড়ি চালানোর হাত খুব ভালো । আমাদের গন্তব্যের
মধ্যে আছে – ছায়াতাল, সিংশোর ব্রীজ, চাঙ্গে ফল্স্, পেলিং, পেমিয়াংচি মনাস্ট্রী
আর রাবডেংস্ রুইন্স । এই জায়গাগুলোয় কালুকের চেয়ে ঠান্ডা বেশি তাই আমরা সেরকম
প্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়েছিলাম । সাড়ে দশটায় বেরিয়ে আমাদের প্রথম গন্তব্য ‘ছায়াতাল’ এ
পৌঁছলাম তখন বেলা এগারোটা কুড়ি ।
|
ছায়াতাল |
ছায়াতাল হচ্ছে একটা হ্রদ । এখানে একটা হোটেলও আছে আর হোটেলের সামনে বসে থাকা
একটা বাঙালি পরিবারকেও দেখলাম । ছায়াতালে আর কিছু দেখার নেই, মিনিট পনেরো ঘুরে
ছবিটবি তুলে আমরা রওনা দিলাম আমাদের দ্বিতীয় গন্তব্যে ।
|
সিংশোর ব্রীজ |
|
সিংশোর ব্রীজ |
এরপর ‘সিংশোর ব্রীজ' । পৌঁছলাম তখন বারোটা পঞ্চান্ন । সিংশোর ব্রীজ হচ্ছে সিকিমের
সর্বোচ্চ ব্রীজ আর এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ । ব্রীজের মাঝখান থেকে একটা পাথর
ফেললে নীচে পড়তে তিন মিনিট সময় লাগে বলে একটা গুজব শুনেছিলাম, কিন্তু সেটা একটা
বাজে কথা (H = ½ gt2 ফর্মূলা অনুযায়ী ৩ মিনিটে
একটা পাথর ওপর থেকে ১,৫৮,৯২২ মিটার বা ১৫৮ কিলোমিটার পড়তে পারে, যা মাউন্ট
এভারেস্টের থেকেও অনেক উঁচু !) । আমি একটা পাথর ফেলে দেখলাম সেটা পড়তে দশ
সেকেন্ড মতো লাগল । যাই হোক, ব্রীজটা খুবই সুন্দর – আমরা হেঁটে এপার থেকে ওপারে
গেলাম । আমাদের গাড়ি ফাঁকা অবস্থায় ওপারে গেল আর ফেরার সময়ে আমাদের নিয়ে পেরোলো ।
এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য অত্যন্ত চমৎকার !
|
পেলিং |
এরপর পেলিং । আমাদের যাওয়ার পথে চাঙ্গে ফল্স্ পড়ল কিন্তু ড্রাইভার বলল সেটা
আমরা ফেরার সময়ে দেখব । পেলিং এ পৌঁছলাম তখন দুপুর দু’টো । এখানে আমাদের দুপুরের
খাওয়ার কথা ছিল – একটা রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করলাম । ভাত, ডাল, তরকারি, মুরগী মিলিয়ে
দু’জনের মোট ১৭০/- পড়ল ।
|
রাবডেংস্ রুইন্স যাওয়ার পথ |
|
এইরকম সাইনবোর্ড পরপর আছে |
|
রাবডেংস্ রুইন্স |
আমরা পেলিং শহরে আলাদা করে আর কিছু দেখিনি – খাওয়াদাওয়া শেষ করে প্রথমে গেলাম
‘রাবডেংস্ রুইন্স’ । পৌঁছলাম তখন দু’টো চল্লিশ । এখানে গেটের কাছে গাড়ি রেখে
বাকিটা হেঁটে যেতে হয় । গেট থেকে বাঁধানো পাহাড়ি পথে প্রায় এক কিলোমিটার । এটাকে
একটা ছোটখাটো ট্রেকিং বলা যেতে পারে । হাঁটতে হাঁটতে একসময়ে দেখলাম একটা
সাইনবোর্ডে লেখা আছে KEEP UP THE SPIRIT. THE DAY IS YOURS. 450 METER. অস্বীকার
করব না, হাঁটাটা কিছুটা বিরক্তিকরই । সেটা সম্ভবতঃ সবারই হয় বোধহয় সেই জন্যই
লোকজনকে উৎসাহিত করার জন্য জায়গায় জায়গায় সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে । আরেকটু এগিয়ে
দেখলাম একটা ২৫০ মিটারের বোর্ড রয়েছে । এরপর - DO NOT GET
TIRED. GREAT EXCITEMENT IS AWAITING. 200 METER. এরপর পাশের সাইনবোর্ডটা
।
আর তারপর – হ্যাঁ, এটাই আমাদের গন্তব্য - রাবডেংস্ রুইন্স । এখানে একসময়ে
সিকিমের রাজধানী ছিল । এটাকে রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ বলা যেতে পারে । জায়গাটা একটা
পাহাড়ের মাথায়, এখান থেকে অনেকদূর পর্যন্ত দেখা যায় । এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতেও
খুব সুন্দর লাগে ।
|
পেমিয়াংচি মনাস্ট্রী |
রাবডেংস্ রুইন্স দেখে বেরোতে বেরোতে সোয়া একঘন্টা লেগে গেল । এরপর গেলাম
‘পেমিয়াংচি মনাস্ট্রী’ । পৌঁছলাম চারটে । এটা একটা বেশ বড় মনাস্ট্রী এবং বেশ সুন্দর । এখানে ঢুকতে একটা মেইন্টেনেন্স ফি বাবদ মাথাপিছু ২০/- করে দিতে হয় । মনাস্ট্রীর
ভেতরে ঢুকে দোতলা এবং তিনতলায় যাওয়া যায় । তিনতলার মেঝেটা পুরোটাই কাঠের । ভেতরে
পুরনোদিনের নানারকম জিনিস আছে ।
|
চাঙ্গে ফল্স্ |
এরপর ফেরার পথ ধরলাম । পথে পড়ল ‘চাঙ্গে ফল্স্’ । অনেকটা উঁচু থেকে পড়ে
অনেকটা নিচে চলে যায় – এটাই এই ফল্সের বৈশিষ্ট্য । এখানে যখন আমরা পৌঁছলাম তখন
প্রায় বিকেল পাঁচটা আর সন্ধ্যে হব হব করছে । এখানে খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছবি তুলে
আমরা কালুক ফেরার পথ ধরলাম । ফেরার পথে একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে গেল । এইসময়ে বেশ
ঠান্ডা লাগছিল – আমাদের সঙ্গে নিয়ে বেরনো অতিরিক্ত গরম পোষাকগুলোর সদ্ব্যবহার
করলাম । কালুকে পৌঁছলাম তখন প্রায় সাতটা । আমাদের প্রথমদিন ঘোরার খরচ ২,৫০০/- । ঘরে
পৌঁছে ডিনারের অর্ডার দিয়ে দিলাম । রুটি আর চিকেন বাটার মশালা মিলিয়ে মোট ২৪৪/-
পড়ল ।
পরেরদিন ২৯শে ডিসেম্বর, ২০১২, শনিবার । আমাদের গন্তব্য সাউথ
সিকিম । দেখার জায়গা – স্যামড্রুপসে, নামচি রক্ গার্ডেন, নামচি আর চারধাম । নামচি
কালুক থেকে অনেকটা দূরে তাই আমাদের ড্রাইভার বলে রেখেছিল যেন সকাল আটটায় বেরোই ।
আমরা সকালে আর রিসর্টের ব্রেকফাস্ট না নিয়ে নিজেদের আনা খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম ।
আমাদের সঙ্গে প্রচুর বিস্কুট, চকোলেট, চানাচুর ইত্যাদি ছিল – তাই খিদেয় পেট চুঁই
চুঁই ব্যাপারটা কখনও হয়নি ।
|
স্যামড্রুপসের ১৩৫ ফুট উঁচু মূর্তি |
সবকটা জায়গাই নামচিতে, বা নামচির কাছাকাছি । কালুক থেকে নামচি যেতে গেলে
জোড়থাং হয়ে যেতে হয় । প্রথম গন্তব্য ‘স্যামড্রুপসে’তে পৌঁছলাম তখন বেলা এগারোটা
পনেরো । জায়গাটার উচ্চতা ৭,০০৯ ফুট । এখানে ঢোকার জন্য টিকিট লাগে, মাথাপিছু ২০/-
। এছাড়া গাড়ি পার্কিং এর জন্য ২০/- । স্যামড্রুপসের কোনও ঐতিহাসিক মূল্য নেই এখানে
‘গুরু পদ্মসম্ভব’ এর একটা ১৩৫ ফুট উঁচু মূর্তি আছে । ১৯৯৭ সালে এই জায়গাটা তৈরি
হয়েছে । চত্বরটা ঘুরে বেড়ানোর পক্ষে বেশ সুন্দর আর ওপর থেকে অনেকদূর পর্যন্ত দেখা
যায় । উঁচু জায়গা থেকে প্রাকৃতিক দৃশ্যের যে সৌন্দর্য্য সেটাই স্যামড্রুপসের
বৈশিষ্ট্য ।
|
স্যামড্রুপসে থেকে নামচি শহর |
|
জপযন্ত্র |
এখানকার একটা দোকান থেকে দু’টো তিব্বতী জপযন্ত্র কেনা হল । দাম নিল
১০০/- করে ।
|
নামচি রক গার্ডেন |
স্যামড্রুপসের পর ‘নামচি রক্ গার্ডেন’ । পাহাড়ী পথে হেঁটে নামতে নামতে পথের
দু’ধারে নানারকম সুন্দর গাছ । এই জায়গাটা আমাদের কিছুটা হতাশ করল । কারণ এখানকার
গাছপালাগুলো ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না । জায়গাটা দেখতে যে পরিমাণ পরিশ্রম
করতে হয় সেটার পক্ষে সৌন্দর্য্যটা যথেষ্ট আকর্ষণীয় নয় ।
এরপর এলাম নামচি শহরে । তখন বাজে দুপুর একটার কিছু বেশি । এখানে আমাদের একটা
হোটেলের সামনে নামিয়ে ড্রাইভার একটু এগিয়ে গিয়ে গাড়িটা পার্ক করল । আমরা এই হোটেলে
দু’টো চিকেন থালি নিলাম । খরচ হল ১৮০/- ।
|
নামচি সেন্ট্রাল পার্ক - বিদেশী লোকেশনের মতো |
এরপর আমরা কিছুক্ষণ নামচি শহরটা দেখলাম । আমরা ছিলাম ‘সেন্ট্রাল পার্ক’ এ যেটা
অত্যন্ত সুন্দর করে তৈরি করা । বাংলা বা হিন্দী ছবিতে যেরকম ফরেন লোকেশন দেখা যায়,
নামচির সিটি সেন্টারে গেলে ঠিক সেরকমই দেখতে পাওয়া যায় । এখানে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি
করে ছবি তুলে আমরা হেঁটে হেঁটে চলে গেলাম আমাদের গাড়ির কাছে ।
চারধাম থেকে বেরোলাম তখন পৌনে চারটে । আমাদের আর কিছু দেখার নেই কাজেই আমরা
ফেরার পথ ধরলাম । জোড়থাং হয়ে কালুক পৌঁছলাম প্রায় সাড়ে ছ’টা । দ্বিতীয়দিন ঘোরার
খরচ ৩,০০০/- । পরেরদিন আমাদের আর দূরে কোথাও যাওয়ার নেই, কালুকে লোকাল সাইট-সিয়িং
করব । এটা করতে ঘন্টাখানেকের বেশি লাগবে না তাই ড্রাইভার বলল দুপুর দেড়টায় আসবে ।
আমরা লাঞ্চ করে বেড়াতে বেরোব । রাতে ডিনারে ভেজ চাউমিন আর চিলি ফিশ অর্ডার দেওয়া
হল । ২৯০/- ।
|
ঘন্ডে ভিলেজ রিসর্টের কটেজ |
|
ঘন্ডে ভিলেজ রিসর্টের কটেজ |
পরেরদিন, ৩০শে ডিসেম্বর, ২০১২ রবিবার সকালে একটু দেরি করে উঠলাম । ব্রেকফাস্ট
নেওয়া হল – ১০০/- করে চিকেন স্যান্ডউইচ । এরপর রিসর্টটা ভালো করে ঘুরে দেখলাম ।
এ’কদিন সকালে বেরিয়ে গেছি, অন্ধকার হওয়ার পরে ফিরেছি কাজেই রিসর্টটা দেখার সুযোগ
পাওয়া যায়নি । পাহাড়ের ধাপে ধাপে রিসর্টের বিভিন্ন কটেজগুলো ঘুরে টুরে দেখলাম ।
দুপুরে ভাত, আলুর দম আর
চিকেন লোকাল স্টাইল নেওয়া হল । খরচ পড়ল ২৪২/- ।
|
রিনচেনপং মনাস্ট্রী |
দুপুরে পৌনে দু’টোর সময়ে বেরোলাম লোকাল সাইট-সিয়িং করতে । প্রথমে গেলাম
‘রিনচেনপং মনাস্ট্রী’তে । এটা কালুক থেকে মিনিট পনেরো লাগে । জায়গাটা খুব একটা
ঘ্যাম কিছু নয় আর সেই জন্যই বোধহয় একটা স্বাভাবিক সৌন্দর্য্য আছে । আমরা যখন গেলাম
তখন প্রার্থনা চলছিল, ফলে আমাদের আর ভেতরে ঢোকা সম্ভব হল না । মনাস্ট্রীর সামনে
একটা বিশাল ফাঁকা মাঠ আছে যেখানে দুপুরের রোদে হাঁটতে বেশ ভালো লাগে ।
|
ওল্ড ব্রিটিশ বাংলো |
এরপর গেলাম ‘ওল্ড ব্রিটিশ বাংলো’য় । নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে জায়গাটা আসলে কি,
তাই আর আলাদা করে বলছি না যে এটা আসলে ব্রিটিশদের একটা পুরনো বাংলো । বাংলো যেরকম
হয়, একটা একতলা বাড়ি, মাথায় তেকোনা ছাদ, সামনে লম্বা বারান্দা আর তার সামনে
মোরামের রাস্তার দু’দিকে ফুলগাছ – এ’সবই আছে । বাংলোর পেছনে চাকরবাকরদের থাকার ঘরও
আছে । এখানে আমরা ছাড়া আর কোনও লোকজন ছিল না, মিনিট পনেরো ঘুরে আবার গাড়িতে উঠে
পড়লাম ।
ব্রিটিশ বাংলোর রাস্তাতে পড়ে ‘পয়জন লেক’ । এই লেকে এখন জল নেই, শুধু বর্ষাকালে
এখানে জল থাকে । ব্রিটিশদের সঙ্গে নেপালীদের যুদ্ধের সময়ে নেপালীরা এই লেকের জলে
বিষ গাছের পাতা মিশিয়ে ব্রিটিশদের হত্যা করে – সেই থেকে পয়জন লেক । আমরা পাহাড়ের
ওপরের রাস্তা থেকে নিচে লেকটা দেখলাম, তবে লেকের কাছে আর যাইনি ।
|
'রবীন্দ্র স্মৃতি ভবন' নামক জায়গা থেকে পাহাড়ের দৃশ্য |
এরপর আজকের এবং আমাদের বেড়ানোর শেষ দ্রষ্টব্য – ‘রবীন্দ্র স্মৃতি ভবন’ । এই
জায়গাটার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কি সম্পর্ক বুঝলাম না, একটা পায়ে চলা পথে মিনিট
পাঁচেক চলার পর একটা ভাঙাচোরা বসার জায়গা । এখান থেকে অন্যান্য পাহাড়ের ঢেউ খুব
সুন্দর দেখা যায় কিন্তু ওই পর্যন্তই । জায়গাটার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক আছে
এরকম কোনও প্রত্যাশা নিয়ে গেলে হতাশ হতে হবে, তবে দেখার জায়গা হিসেবে চলনসই ।
|
মন্দিরের সামনে থেকে কালুক শহর |
ড্রাইভার আমাদের কালুক বাজারে ছেড়ে দিল । লোকাল সাইট-সিয়িং এর জন্য
লাগল ৬০০/- । দুপুর তিনটে বাজে, এক্ষুণি রিসর্টে ফেরার মানে হয় না, সেই জন্য আমরা
আশপাশটা একটু হাঁটলাম । কালুক বাজারে ওই এলাকার একটা ম্যাপ আছে, সেটায় কোন জায়গা
কতদূরে এসব লেখা আছে । সেই ম্যাপ দেখেই জানতে পারলাম ঠিক বাজারের ওপরেই পাহাড়ের
ওপর একটা শিবের মন্দির আছে । সিঁড়ি দিয়ে সেই মন্দিরে উঠতে হয় । এখান থেকে পুরো
কালুক শহরটা দেখা যায় । মন্দিরটা দেখার সেরকম কিছু না থাকলেও এখানকার দৃশ্য
অত্যন্ত মনোরম । কালুকে গিয়ে এই জায়গাটা একবার না গেলে সত্যিই কিছু না দেখা থেকে
যাবে ।
পাহাড়ের ওপর থেকে নেমে এসে আমরা কিছু দোকানপাট দেখলাম । পুরো কালুক বাজারে
সবমিলিয়ে বোধহয় ২৫ – ৩০ টা দোকান আছে, যার
মধ্যে অন্ততঃ ৫ টা মদের দোকান । বাকি দোকানগুলোয় মাছমাংস, মনিহারি, মুদির জিনিস
পাওয়া যায় । আমাদের কিছু উপহার দেওয়ার মতো জিনিস কেনার ছিল – কিন্তু ওখানে সেরকম
দোকান নেই বললেই চলে । ঢাকনা দেওয়া চিনামাটির নক্সা করা কাপ পাওয়া যায় (যেগুলোর
দাম ৪০/- করে) কিন্তু সেগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে । অনেক খুঁজে আমাদের
রিসর্টের রাস্তার সামনের একটা দোকান থেকে কিছু জিনিস কেনা হল । হয়তো প্রতিযোগিতা
নেই বলেই এখানে জিনিস পত্রের দাম একেবারেই কমাতে চায় না । সবমিলিয়ে আমাদের ৫৮০/-
হল যা অনেক দরদাম করেও ৫৬০/- নিচে নামানো গেল না ।
|
দ্য লাস্ট সাপার অ্যাট কালুক |
রিসর্টে ফিরে এলাম । এটাই আমাদের কালুকে শেষ রাত্রি – পরেরদিন সকালে আমাদের এন
জে পি র জন্য বেরিয়ে পড়তে হবে । সন্ধ্যেবেলা যাবতীয় গোছগাছ সেরে নিলাম । ম্যানেজারের
সঙ্গে কথা বলে সব টাকা পয়সাও মিটিয়ে দিলাম । গাড়ির জন্য আমাদের মোট
দিতে হল ১২,০০০/- (এন জে পি থেকে কালুক ৩,০০০ + পেলিং এর দিকের সাইট-সিয়িং
২,৫০০ + নামচির দিকের সাইট-সিয়িং ৩,০০০ + লোকাল সাইট-সিয়িং ৬০০ + কালুক থেকে
এন জে পি ৩,০০০ - ছাড় ১০০) । আমরা সাধারণতঃ শেষদিনের ডিনারটা একটু ভালো কিছু করি,
তাই মিক্সড্ ফ্রাইড রাইস আর চিকেন মাঞ্চুরিয়ান অর্ডার দেওয়া হল । খরচ পড়ল ৩০৮/- ।
|
এই গাড়ি করেই ঘুরেছিলাম |
৩১শে ডিসেম্বর, সোমবার আমাদের ফেরার ট্রেন উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের এন জে পি
থেকে ছাড়ার সময় বিকেল ৫:৪০, কিন্তু ড্রাইভার বলল
রাস্তায় অনেক জায়গায় কাজ হচ্ছে আর বিভিন্ন জায়গায় যানজট হচ্ছে – তাই ঝুঁকি নিয়ে
দেরি করে বেরনো ঠিক হবে না । তাই পরেরদিন সকালে ঠিক আটটার সময়ে আমরা নিজেদের আনা
খাবার দিয়ে ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পড়লাম কালুক থেকে । বেরনোর সময়েও আরেকদফা সিল্কের
কাপড় দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হল । কাঞ্চনজঙ্ঘাকে একবার শেষবারের মতো অভিবাদন করে
গাড়িতে উঠে পড়লাম ।
|
এন জে পি স্টেশনে - ফেরার পথে |
জোড়থাং পৌঁছলাম সকাল দশটায় । এখানে দাঁড়ানোর কোনও দরকার নেই, তাই আরও এগিয়ে
চললাম । রাস্তায় সেরকম দাঁড়াতে কোথাও হয়নি, দাঁড়াতে হল সেভক এর কাছে পৌঁছে – এখানে
রাস্তায় বেশ যানজট হয় । পাহাড় থেকে সমতলে নেমেও যানজট অব্যাহত রইল । ড্রাইভার
সুরেশ গুরুং যখন আমাদের এন জে পি তে নামাল, তখন দুপুর আড়াইটে ।
আমরা স্টেশনের লাগোয়া ভাতের হোটেলে দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম । ‘মটন ভাত’ (হ্যাঁ, এইসব হোটেলে মাটন লেখা থাকে না সাধারণতঃ!) ৮০/- করে । খেয়েদেয়ে ওয়েটিং
রুমে এসে বসে রইলাম । সন্ধ্যে ছ’টা নাগার ট্রেন এল । মাঝরাতে ট্রেনের মধ্যেই আমরা New Year celebrate করলাম । ফেরার ট্রেন অবশ্য মাত্র
৪৫ মিনিট লেট ছিল – তাও সেটা দমদম আর শিয়ালদহের জঘন্য সিগন্যালিং ব্যবস্থার জন্য ।
১লা জানুয়ারি, ২০১৩ মঙ্গলবার সকালে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বেরিয়ে আমরা যখন
ট্যাক্সিতে উঠলাম তখন সবে ছ’টা বেজেছে ।
সারসংক্ষেপঃ
১. ‘অনুস্বর’ বাদ দিয়ে সিকিমের যে মাত্র কয়েকটা জায়গা আছে,
কালুক তার মধ্যে একটা । কালুক শহরটা বেশ ছোট – মধুচন্দ্রিমার পক্ষে বিশেষ সুন্দর ।
২. নিউ জলপাইগুড়ি (শিলিগুড়ি) স্টেশন থেকে কালুকের দুরত্ব ১১৯
কিলোমিটার । এন জে পি থেকে গাড়ির ব্যবস্থা আছে – কালুক যেতে মোটামুটি পাঁচ – সাড়ে পাঁচ
ঘন্টা লাগে । ছোট গাড়ির ভাড়া ৩,০০০ টাকা । বড় গাড়ির ভাড়া ৩,৫০০ টাকা ।
৩. কালুকে কিছু হোটেল আছে আর আছে কিছু রিসর্ট । এদের মধ্যে ঘন্ডে,
রিনচেনপং আর ম্যান্ডারিন উল্লেখযোগ্য । আমরা ছিলাম ঘন্ডে রিসর্টে যার ওয়েবসাইট হল
: http://www.ghondayresort.com/
৪. কালুকের প্রায় সব জায়গা থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় ।
রিসর্টের ঘরের ভেতর থেকেও দেখা যায় ।
৫. কালুক থেকে সাইট-সিয়িং এর জন্য প্রধানতঃ দু'দিকে যাওয়া যায় - উত্তর-পশ্চিম আর দক্ষিণ । উত্তর-পশ্চিমে পেলিং এর দিকে কিছু দেখার জায়গা আছে - ছোটগাড়ির ভাড়া পড়ে ২,৫০০ টাকা । দক্ষিণে নামচির দিকে যেতে পড়ে ৩,০০০ টাকা ।
৬. এগুলো বাদ দিয়ে লোকাল সাইট-সিয়িং আছে যেটা দেখার জন্য গাড়ি ভাড়া না করে লোকাল গাড়িতেও ঘোরা যেতে পারে । গাড়ি ভাড়া করলে ৬০০ টাকা মতো পড়বে ।
৭. কালুকে ঘোরাঘুরি করার জন্য ড্রাইভার সুরেশ গুরুং এর সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে - ড্রাইভারের সঙ্গে সরাসরি কথা বললে গাড়িভাড়া কিছুটা কম করা যায় । সুরেশ গুরুং এর মোবাইল নম্বর - ৯৬৪৭৮৫৬১৯৫ ।
৮. কালুকে কেনাকাটার জন্য দোকানপাট নেই বললেই চলে - মাত্র একটা-দু'টো দোকানেই কিনে নিয়ে আসার মতো কিছু পাওয়া যায় ।
উপসংহারঃ
|
কাঞ্চনজঙ্ঘা |
মধুচন্দ্রিমা যাপনের জন্য কালুক একটা খুব সুন্দর জায়গা - কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাছাড়া এখানে যাওয়ার মানে হয় না । জায়গাটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা, তাই যারা বেশি লোকজনের ভীড় পছন্দ করে না, তাদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় । দার্জিলিঙ, গ্যাংটক, কার্সিয়ং, কালিম্পং আর পেলিং এ যারা যেতে চায় না, তাদের পক্ষেও কালুক একটা ভালো দেখার জায়গা । এখানে তিনদিনের বেশি থাকার কোনও মানে হয় না, কারণ তাহলে হোটেলে বসে থাকা ছাড়া আর কিছুই করা যাবে না । হয়তো ধীরে ধীরে কালুকও ট্যুরিস্টদের ভীড়ে একসময়ে ঘিঞ্জি হয়ে যাবে - তখন আর এখনকার মতো মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করা যাবে না । কাঞ্চনজঙ্ঘার কোলে সিকিমের আরেকটা শহর দার্জিলিঙ বা গ্যাংটক হয়ে ওঠার আগে একবার কালুক ভ্রমণ করে আসাই ভালো !
কালুক ভ্রমণের আরও ছবি দেখতে হলে click here: