আমি ব্লগ লেখার খুব বেশি সমর্থক কোনওদিনও ছিলাম না, সত্যি কথা বলতে কি এখনও যে আছি তা নয় । তার একটা প্রধান কারণ আমার ধারণা ব্লগ লেখার থেকেও পড়া অনেক বেশি ক্লান্তিকর । অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেক সময়ই পড়তে শুরু করে শেষ করা হয়ে ওঠে না । নিজের ধৈর্য এবং/অথবা আগ্রহের অভাবকে 'ঠিক আছে, বাকিটা পরে পড়ব' জাতীয় অজুহাত দিয়ে ঢেকে দিই - আর আমরা সবাই জানি সেই 'পরে' টা আর কখনওই আসে না । তো, এই কারণে আমি ঠিক করেছি আমার ব্লগকে কখনওই অন্যের ক্লান্তির কারণ ঘটাব না, আমার ব্লগের বিষয় হবে প্রধানতঃ ভ্রমণ । আমার মতো যেসব বাঙালিরা ঘুরতে ভালোবাসে, তাদের জন্য আমার ব্লগ হবে তথ্যের একটা উৎস । আমার নিজের একটা অভ্যেস আছে, কোনও জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার আগে সেই জায়গাটা সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি, আর ইন্টারনেট ঘাঁটতে গিয়ে আমার বরাবরই মনে হয়েছে যে ইন্টারনেটে লেখালেখি করার ব্যাপারে বাঙালিদের থেকে কুঁড়ে খুব কম শিক্ষিত জাতই আছে । আমার মতো যেসব বাঙালিরা আছে, যারা ইন্টারনেটে কোনো একটা ইংরিজীতে লেখা দেখলেই না পড়ার চেষ্টা করে, তাদের জন্য আমার ব্লগ সহায়ক হবে, এই বিশ্বাস নিয়ে শুরু করছি আমার ভ্রমণকাহিনী । আগেই বলে রাখি, আমি স্ট্যাটিসটিক্সের ছাত্র ছিলাম, তাই আমার ব্লগে তত্ত্বের থেকে তথ্যের দেখাই মিলবে বেশি ।

Sunday, January 3, 2016

গাদিয়াড়া ভ্রমণ

৯৯৩ সালে 'প্রতিদিন' পত্রিকায় 'ঘরের পাশেই গাদিয়াড়া' শিরোনামে সরিৎ দত্তের একটা প্রবন্ধ বেরিয়েছিল (যেটার নাম আবার সূচীপত্রে ভুল করে 'হাতের কাছেই গাদিয়াড়া' ছাপা হয়েছিল !) । এই সরিৎ দত্ত সম্পর্কে আমার জেঠু হন । ওনার লেখা পড়ে আর ওনার মুখে শুনেই আমার গাদিয়াড়া যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ জেগেছিল । আমাদের গাড়ি কেনার পর থেকে কখনও কোনও লং-ড্রাইভে যাওয়া হয়নি, তাই একদিনের জন্য গাড়ি নিয়ে কোথায় যাওয়া যায় এটা যখনই ভাবলাম, মাথায় গাদিয়াড়া এল কারণ 'ঘরের পাশেই গাদিয়াড়া' !

জেঠু গেছিলেন তাঁর দুই ভাইজির সঙ্গে আর আমরা গেলাম আমাদের দুই মেয়ের সঙ্গে । 'কথা' আর 'কলি' আমাদের যমজ মেয়ে - ওদের বয়স ৬ মাস । ওদের সঙ্গে ওদের মা-বাবা অর্থাৎ অমৃতা আর আমি । আমার সঙ্গে আমার মা-বাবা, বড়মাসি-মেসোমশাই । সেইসঙ্গে মিনকা আর তার সঙ্গে তার মা-বাবা অর্থাৎ কঙ্কনাদি আর অমিতদা । কঙ্কনাদির সঙ্গে ওর মা-বাবা অর্থাৎ কাকিমা আর কাকু । কথাকলি-র এটাই প্রথম ভ্রমণ - প্রকৃতপক্ষে নার্সিংহোম থেকে আসার পর এই প্রথম বাড়ির বাইরে রাতে থাকা । বাচ্চা নিয়ে বেড়াতে গেলে নানারকম প্রস্তুতি নিতে হয়, সেসব যথাসম্ভব নিয়ে ২রা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল সাড়ে আটটায় আমরা বেরিয়ে পড়লাম গাদিয়াড়ার উদ্দেশ্যে । বলা বাহুল্য, আমাদের গাড়ির চালকের আসনে আমি । গাদিয়াড়ার রাস্তা চিনি না, ভরসা মোবাইলের জি পি এস ।

মোটামুটিভাবে জানি গাদিয়াড়ার দুরত্ব ৯০ - ৯৫ কিলোমিটারের মতো, তাই ঘন্টা তিনেকের বেশি লাগার কথা নয় । তবে সঙ্গে বাচ্চা থাকলে সময় বেশিই লাগে । এছাড়া রাস্তায় ব্রেকফাস্ট করার দরকার ছিল । গাদিয়াড়া যেতে হয় হুগলী সেতু - কোণা এক্সপ্রেসওয়ে - বোম্বে রোড ধরে । উলুবেড়িয়া থেকে গড়চুমুক হয়ে যাওয়া যায় আবার বাগনান থেকে শ্যামপুর হয়েও যাওয়া যায় । রাস্তায় ব্রেকফাস্ট করার জন্য ভাল জায়গা হল উলুবেড়িয়ার 'আজাদ-হিন্দ ধাবা' । কিন্তু উলুবেড়িয়া থেকে গড়চুমুক হয়ে গাদিয়াড়া গেলে 'আজাদ-হিন্দ' পড়বে না কারণ তার আগেই বাঁদিকে বেঁকে যেতে হবে । যাই হোক, আমাদের সঙ্গে ব্রেকফাস্ট করার মতো লুচি আর আলুরদম ছিল, আমরা এক জায়গায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে সেগুলোর সদ্ব্যবহার করে ফেললাম । জি পি আর এস আর রাস্তার লোকের সাহায্যে আমরা গাদিয়াড়ায় পৌঁছলাম দুপুর পৌনে একটায় ।

রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজ
গাদিয়াড়ায় 'পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগম' এর 'রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজ' আছে । গাদিয়াড়ার বৈশিষ্ট্য হল এটা গঙ্গা আর রূপনারায়ণের মিলনস্থল আর ট্যুরিস্ট লজটা রূপনারায়ণ নদের একেবারে পাড়ে । লজটা বিশাল জায়গা জুড়ে এবং ভেতরে পার্কিং-এর ব্যবস্থাও আছে । আমরা চেক্‌ইন করার সময়ে দুপুরের খাবারের অর্ডারও দিয়ে দিলাম ।


ট্রিপল বেড রুম
আমরা পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগম বা WBTDC-এর ওয়েবসাইট থেকে অন্‌লাইন বুকিং করেছিলাম । ডাবল্‌ আর ট্রিপল্‌ বেড রুমের ভাড়া যথাক্রমে ৮৭৫/- টাকা এবং ১,১২৫/- টাকা (এরসঙ্গে সার্ভিস ট্যাক্স যোগ হবে) । ঘরগুলোর সবগুলোই বেশ বড় এবং রূপনারায়ণ ফেসিং । প্রত্যেকটা ঘরের সামনেই কিছুটা করে ব্যালকনি আছে । বাথরুমও বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, তবে বাথরুমে গরম জলের কোনও ব্যবস্থা নেই । গরম জলের দরকার হলে সেটা পেছনের টানা বারান্দায় লাগানো গিজার থেকে নিজে গিয়ে নিতে হয় ।

ডাইনিং হল
আমরা ঘরে এসে চান সেরে নিয়ে লাঞ্চ করতে গেলাম । রিসর্টে একটা বেশ বড় ডাইনিং হল আছে, তবে চাইলে ঘরে খাবার আনিয়েও খাওয়া যায় (সেক্ষেত্রে মাথাপিছু ১৫/- টাকা করে বেশি দিতে হয়) । এখানে 'থালি' সিস্টেমে খাবার পাওয়া যায় । আমরা কয়েকটা মাছ, মাংস আর চিকেন থালির অর্ডার দিয়েছিলাম । কাকু-কাকিমা হোটেলের রান্না খেলেন না, ওনাদের ড্রাইভারসমেত আমাদের ন'জনের খাবারের মোট খরচ পড়ল ১,৫৩০/- টাকা (ট্যাক্সসমেত) ।

কুয়াশায় ঘেরা রূপনারায়ণের পাড়
খাওয়ার পর আমরা কয়েকজন বেরোলাম চারপাশটা দেখতে । রিসর্টের সামনে দিয়েই বয়ে চলেছে রূপনারায়ণ নদ আর অনতিদূরেই মিলিত হয়েছে গঙ্গার সঙ্গে । কিন্তু পুরো জায়গাটাই কুয়াশায় ঢাকা - কিছুই দেখা যাচ্ছে না । রিসর্টের সামনের রাস্তাটা বেশ সরু, একটা গাড়ি কোনওমতে যেতে পারে । এই রাস্তার একপাশে রিসর্ট আর অন্যপাশ ঢালু - সোজা রূপনারায়ণ । কুয়াশার এমনই বহর, এই ঢালুর পরে আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না, এমনকি জলও না, নদের ওপাশ-টোপাশ তো দূরের কথা । ওই ঢালুর ওপরে কয়েকটা ছাগল চরছিল, রূপনারায়ণের বদলে তাদের দেখেই (আর ফ্যান্টাসাইজ করেও !) সন্তুষ্ট থাকতে হল । কুয়াশার জন্য রোদের তেজও বিশেষ ছিল না, সন্ধ্যে হয়ে আসছিল । আমরা কিছুক্ষণ রিসর্টের ভেতরে ঘোরাঘুরি করে ঘরে ফিরে এলাম ।

রিসর্টের ভেতরে
সন্ধ্যের পর গাদিয়াড়ায় কিছু করার নেই । ভেতরে ঘোরাঘুরি করার জায়গা আছে, তবে গাছপালা ঘেরা আর 'সন্ধ্যের পর গাছের কাছে না যাওয়াই ভাল' । আমাদের সঙ্গে বাচ্চা আছে কাজেই সময় কাটানোটা আমাদের কাছে কোনও সমস্যা নয় (সত্যি বলতে কি আমাদের সাধারণতঃ সময়ের অভাবই হয়), তবে রিসর্টের ঘরে টিভি আছে, চাইলে সেটা নিয়ে সময় কাটানো যেতে পারে । আমরা সন্ধ্যেবেলা চা-টা খেলাম । এরা চাইলে চা ঘরে দিয়ে যায় আর তার জন্য কোনও অতিরিক্ত চার্জ লাগে না । রাতের খাবার খাওয়া জন্য আবার ডাইনিং হলে যেতে হল । রাতে আমরা রুটি চিকেন ডিম ইত্যাদি নিয়েছিলাম । খরচ পড়ল মোট ৮২৫/- টাকা । ঘরে এসে শুয়ে পড়লাম ।

সকালের আলোয় রূপনারায়ণের পাড়
পরেরদিন সকালে ঘুম ভাঙল ৭ টা নাগাদ । জানালা দিয়ে দেখলাম বাইরেটা কুয়াশায় ঢাকা - কুয়াশার ঘনত্ব আগেরদিন বিকেলের থেকেও বেশি । সূর্য্যোদয় দেখার কোনও সম্ভাবনা নেই, কিন্তু কোনও জায়গায় বেড়াতে এসে জায়গাটা হেঁটে ঘুরে দেখা আমার অভ্যেস, তাই ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম । রূপনারায়ণের পাড় ধরে হেঁটে যেতে ভালোই লাগছিল । খুব একটা বেশি ঠান্ডা নেই । জায়গাটা একেবারেই গ্রাম - মাটির বাড়ি, মাটির উনুন এসব দেখতে পাওয়া যায় । গাদিয়াড়ার খেজুর গুড়ের নাম আছে, যদিও আমাদের কেনা হয়ে ওঠেনি । রূপনারায়ণের পাড়ে এখানে অনেকে পিকনিক করতে আসে, সেরকম দু'তিনটে দলকে দেখলাম । কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ছবিটবি তুলে আবার রিসর্টে ফিরে এলাম ।

পার্ক-এ অভিভাবকদের সঙ্গে কথা-কলি আর মিনকা
রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজে 'কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট' আছে - লুচি-তরকারি । ফিরে এসে ব্রেকফাস্ট করতে করতে ন'টা বেজে গেল । এই সময়ে এখানে খুব ট্যুরিস্টের ভীড়, তাই লজের লোকেরা আমাদের বারবার বলে দিল আমরা যেন ১১টায় ঘর ছেড়ে দিই । তাই ব্রেকফাস্টের পরেই আমরা রেডি হতে শুরু করলাম । এগারোটায় ঘর ছেড়ে দিয়ে হোটেলের পাওনা মিটিয়ে দিয়ে আমরা লাঞ্চের অর্ডার দিয়ে দিলাম । রিসর্টের ভেতরে একটা পার্ক আছে, সেখানে বাচ্চাদের দোলনা, ঢেঁকি এসব আছে । দোলনা দেখলে লোকজনের আর নিজের বয়সটা মনে থাকে না এটা আগেও দেখেছি, এখানেও দেখলাম । আমাদের দলেরই কেউ কেউ কিছুক্ষণ করে দোলনায় চড়ে নিল ।

লাঞ্চ পেলাম তখন দুপুর ১টা বেজে গেছে । আজ আমরা কয়েকজনের জন্য আলা-কার্টে চিকেন আর ভাত নিয়েছিলাম আর বাকিদের জন্য ডিম বা মাছের থালি । খরচ হল ১,২৯১/- টাকা । গাদিয়াড়া থেকে আমাদের গাড়ি রওনা দিল তখন দুপুর ২ : ১৫ বাজে ।

আটান্ন গেট
আগেই বলেছি গাদিয়াড়া যাওয়ার দু'টো রাস্তা আছে । ফেরার সময়ে ঠিক করলাম গড়চুমুক হয়ে 'আটান্ন গেট' দেখে ফিরব । জায়গাটা সেরকম কিছু নয়, দামোদর নদের ওপরে আটান্নটা লক্‌ গেট । জি পি আর এস-এর গাইডেন্স ফলো করে পৌঁছতে সময় লাগল ঘন্টাখানেক । এই জায়গাটাও একটা পিকনিক-স্পট, আর সেটা বুঝতে পারলাম এখানকার ভীড় দেখে । কলকাতার কোনও বড় পুজোর থেকে কম নয় !

আটান্নগেট থেকে ফেরার রাস্তা ধরলাম । উলুবেড়িয়া পর্যন্ত্য এসে বোম্বে রোড ধরতে হয় । শেষের কিছুটা রাস্তা বেশ খারাপ, তবে দুরত্ব হিসেবে এটা যাওয়ার রাস্তার থেকে কম । বোম্বে রোডের ওপরে আমরা একজায়গায় দাঁড়িয়ে চা খেলাম । তারপর সোজা বাড়ি !

সারসংক্ষেপঃ

১. কলকাতা থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে হাওড়া জেলায় রূপনারায়ণ আর গঙ্গার মিলনস্থলে গাদিয়াড়া । জায়গাটা এমনিতে নিরিবিলি, তবে শীতকালে বেশ ভীড় হয় ।
২. গাদিয়াড়া যাওয়ার জন্য ধর্মতলা থেকে বাস পাওয়া যায় । ট্রেনে গেলে হাওড়া থেকে উলুবেড়িয়া বা বাগনান স্টেশনে নেমে সেখান থেকে বাসে বা গাড়িতে যাওয়া যায় । নিজেরা গাড়ি নিয়ে গেলে কোণা এক্সপ্রেসওয়ে - উলুবেড়িয়া হয়ে অথবা কোণা এক্সপ্রেসওয়ে - বাগনান হয়ে যেতে হয় ।
৩. গাদিয়াড়ায় WBTDC-র রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আছে । এদের ওয়েবসাইট http://www.wbtdc.gov.in/ থেকে বুকিং করা যায় অথবা ডালহৌসিতে এদের অফিসে গিয়েও বুকিং করা যায় ।
৪. এখানকার খাবারের মান চলনসই । প্রতিদিন মাথাপিছু ৩০০/- টাকায় মোটামুটি ভালোই খাওয়া হয়ে যায় ।
৫. এখানে রিসর্টের বাইরে ঘোরাঘুরির সেরকম কিছু নেই । রূপনারায়ণের পাড় ধরে হেঁটে ঘোরা যেতে পারে ।
৬. রাতে থাকার ইচ্ছে না থাকলে এখানে দিনের দিন গিয়ে পিকনিকও করা যেতে পারে । পিকনিক করার জন্য রিসর্টের আলাদা ব্যবস্থা আছে আর সেটাও এদের ওয়েবসাইট থেকে বুকিং করা যায় ।
৭. গাদিয়াড়া যাওয়া বা ফেরার পথে গড়চুমুক যাওয়া যেতে পারে । এখানে দামোদরের ওপরে লক্‌গেট দেখা যায় ।
৮. গাদিয়াড়া থেকে লঞ্চে করে রূপনারায়ণ পার হয়ে গেলে যেখানে যাওয়া যায় সেই জায়গার নাম 'গেঁওখালি' আর গঙ্গা পার হয়ে গেলে পৌঁছনো যায় 'নূরপুর'-এ । এই দু'টোই একেকটা ট্যুরিস্ট স্পট ।

উপসংহারঃ

ঘরের পাশেই গাদিয়াড়া
কলকাতা থেকে ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে ট্যুরিস্ট স্পট গাদিয়াড়া । এখানে দেখার সেরকম কিছু না থাকলেও বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বেশ ভালো । আবহাওয়া ভালো থাকলে রূপনারায়ণের দৃশ্য বেশ মনোরম (এটা আমি গুগল্‌ ইমেজ থেকে জেনেছি, নিজে দেখার সুযোগ পাইনি) । গাদিয়াড়ায় একদিনের বেশি থাকার মানে হয় না, বোর লাগতে পারে । গাড়িভাড়া বাদ দিলে আমাদের মাথাপিছু খরচ পড়েছিল ৯৩৫/- টাকা মতো, যেটা একদিনের ঘোরার পক্ষেও বেশ কম । আমাদের মতো যাদের মাঝে মাঝেই একটা স্যাক নিয়ে বেরিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে আর 'একদিনের জন্য কোথায় যাওয়া যায়' এই দিয়ে গুগল সার্চ করতে হয়, তাদের জন্যই গাদিয়াড়া । গাদিয়াড়া ভ্রমণকারীদের 'অবশ্য গন্তব্য'-এর তালিকায় পড়ে না, তবে জায়গাটার একটা সুবিধে হল ছ'মাসের বাচ্চা থেকে শুরু করে একশ বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত (এমনকি চাইলে তার বেশিও !) সবাই এখানে যেতে পারে । এখানে যাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই । তাই বছরের যেকোনও সময়ে কম খরচ, কম সময়সীমা আর কম দুরত্বের মধ্যে কোথায় যাওয়া যায় - এটা যদি প্রশ্ন হয় তাহলে উত্তর হল 'ঘরের পাশেই গাদিয়াড়া' !

গাদিয়াড়ার আরও ছবি দেখতে হলে click here.